রবিবার ১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইন্দো-বাংলা ফার্মা: নিষিদ্ধ ও বাতিল ঔষুধের চাকচিক্যে ভুয়া বার্ষিক প্রতিবেদন

  |   শুক্রবার, ১১ জুন ২০২১ | 252 বার পঠিত | প্রিন্ট

ইন্দো-বাংলা ফার্মা: নিষিদ্ধ ও বাতিল ঔষুধের চাকচিক্যে ভুয়া বার্ষিক প্রতিবেদন

 

শেয়ারবাজার রিপোর্ট: নিষিদ্ধ ও বাতিল করা ঔষুধের বিক্রি ও মজুদ দেখিয়ে বছরের পর বছর ভুয়া বার্ষিক প্রতিবেদন তৈরি করে তা বিনিয়োগকারী ও নিয়ন্ত্রক সংস্থা তথা পুঁজিবাজারের কাছে প্রকাশ করে আসছে তালিকাভুক্ত ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। নেট বিক্রি বাড়ানোর মাধ্যমে ইপিএস বৃদ্ধি দেখিয়ে বরাবরই পুঁজিবাজারের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছে ইন্দো-বাংলা ফার্মা।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর এবং লাইসেন্সিং অথরিটি (ড্রাগস) ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালসের ১৩টি ঔষধ উৎপাদন, মওজুদ, বিক্রয় বিতরণ ও প্রদর্শন নিষিদ্ধ করে। ঔষধগুলো হলো: ইন্দোফেনাক ১০০ এসআর ক্যাপসুল, কোট্রিমক্স ডিএস ট্যাবলেট, টেনসারিল ট্যাবলেট, ইন্দোস্টিন আর ১৫০ ট্যাবলেট, কোট্রিমক্স সাসপেনসন, মেট্রল সাসপেনসন, মেট্রল ট্যাবলেট, ইন্দোপ্লেক্স বি ট্যাবলেট, প্যারাসিটামল ট্যাবলেট, রিবোফ্লাভিন ট্যাবলেট, ইন্দোফ্লক্স ক্যাপসুল, ইন্দোমক্সিন ক্যাপসুল এবং ইনডক্স ক্যাপসুল। নিম্নে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিটি তুলে ধরা হলো:

 

উল্লেখিত ঔষুধগুলোর ক্ষেত্রে সরকারের সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রক সংস্থা অর্থাৎ ঔষুধ অধিদপ্তর থেকে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়।

এরপর মহামান্য সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশন থেকে ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালসের সকল প্রকার এন্টিবায়োটিক (নন-পেনিসিলিন, পেনিসিলিন ও সেফালোস্পরিন) জাতীয় পদের উৎপাদন বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়ায় ঔষুধ অধিদপ্তর থেকে ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালসের এন্টিবায়োটিক (নন-পেনিসিলিন, পেনিসিরিন ও সেফালোস্পরিন) জাতীয় পদের উৎপাদন বন্ধ করে দেয়। নিম্নে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের বিজ্ঞপ্তিটি তুলে ধরা হলো:

 

ঔষুধ অধিদপ্তরের এরকম নিষেধাজ্ঞা স্বত্ত্বেও দেদারছে উৎপাদনের পাশাপাশি ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালস তাদের বার্ষিক প্রতিবেদনে নিষিদ্ধ ও বাতিল ঔষুধের রমরমা বিক্রি দেখিয়েছে। নিম্নে কোম্পানির বার্ষিক প্রতিবেদন থেকে প্রাপ্ত তথ্যের চিত্র তুলে ধরা হলো:

কোম্পানির বার্ষিক প্রতিবেদনে ভুয়া ঔষধের নাম ব্যবহার এবং যেসব পণ্য নিষিদ্ধ সেগুলোর কৃত্রিম বিক্রি দেখিয়ে কোম্পানির ইপিএস মনগড়াভাবে তৈরি করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তাই বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) সুষ্ঠু তদন্ত করলেই ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালসের সত্যতা বেরিয়ে আসবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

এ ব্যাপারে ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালসের প্রতিষ্ঠাতা যার নামে ইন্দো-বাংলার মালিক হিসেবে সর্বপ্রথম ট্রেড লাইসেন্স ইস্যু করা হয় এ.এফ.এম সানোয়ারুল হক (সগীর) এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ডেইলি শেয়ারবাজার ডটকমকে জানান, ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালসের আমি অর্ধাংশের মালিক। প্রতিষ্ঠানটি আমার নিয়ন্ত্রণে থাকাকালীন সময়ে খুবই সুনামের সঙ্গে ব্যবসা করে আসছিল। কিন্তু আমার শারিরিক অসুস্থতার কারণে প্রতিষ্ঠানটির দেখভালের দায়িত্ব আমার ছোটভাই এ.এফ.এম আনোয়ারুল হক (সাব্বির) এর হাতে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে সে (ইন্দো-বাংলার বর্তমান এমডি) ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতা ও অর্থের জোরে আমাকে মিথ্যা মামলায় জেল খাটায়। এই সুযোগ সে ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালসকে আমাকে না জানিয়েই কোম্পানি হিসেবে গঠন করিয়ে ভুয়া প্রসপেক্টাস তৈরি করে শেয়ারবাজার নিয়ে আসে। এতে সম্পূর্ণ সহযোগিতা করে ইন্দো-বাংলার বর্তমান পরিচালক বেলাল খান (আইপিও অনুমোদনের পাইপলাইনে থাকা বিডি পেইন্টসের এমডি) এবং ইস্যু ম্যানেজার এএফসি ক্যাপিটাল লিমিটেড। যদিও এ ব্যাপারে আমি কমিশনে কয়েকবার প্রমাণসহ অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু নিয়ন্ত্রক সংস্থা আমার অভিযোগের প্রেক্ষিতে কোন ব্যবস্থা নেয়নি। এমনকি আজ পর্যন্ত কমিশনে ডেকেও নিয়ে কিছু জিজ্ঞেস করেনি।

এ ব্যাপারে ইন্দো-বাংলা ফার্মাসিউটিক্যালসের বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ.এফ.এম আনোয়ারুল হক (সাব্বির) এর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

শেয়ারবাজার২৪

 

Facebook Comments Box

Posted ৬:৪৪ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ১১ জুন ২০২১

sharebazar24 |

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১
১২১৩১৪১৫১৬১৭১৮
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭২৮২৯৩০৩১  
মো. সিরাজুল ইসলাম সম্পাদক
মো. মহসিন হোসেন উপদেষ্টা সম্পাদক
বার্তা ও সম্পাদকীয় কার্যালয়

৬০/১, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০

হেল্প লাইনঃ 01742-768172

E-mail: [email protected]