শুক্রবার ১৪ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

রেমিট্যান্স প্রবাহে স্থিতিশীলতা, রিজার্ভে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | 127 বার পঠিত | প্রিন্ট

রেমিট্যান্স প্রবাহে স্থিতিশীলতা, রিজার্ভে ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আবারও ৩১ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বিপিএম-৬ হিসাবপদ্ধতি অনুযায়ী রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৬ দশমিক ০৮ বিলিয়ন ডলারে।

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী গ্রস রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১ বিলিয়ন ডলার, যা এর আগে ছিল ৩০ দশমিক ৫৯ বিলিয়ন ডলার। বিপিএম-৬ অনুসারে রিজার্ভ আগের ২৫ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬ দশমিক ০৮ বিলিয়ন ডলার।

নিট রিজার্ভের অবস্থা
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকৃত বা নিট রিজার্ভের আলাদা হিসাবও রয়েছে, যদিও তা প্রকাশ করা হয় না। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, বর্তমানে নিট রিজার্ভ ২১ বিলিয়ন ডলারের বেশি।

বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি দেশের কমপক্ষে তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর মতো রিজার্ভ থাকা জরুরি। সে হিসাবে বাংলাদেশ বর্তমানে সীমান্তরেখায় অবস্থান করছে।

রেমিট্যান্স ও ডলার কেনাবেচার প্রভাব
প্রবাসী আয়, রপ্তানি, বৈদেশিক বিনিয়োগ ও ঋণের মাধ্যমে রিজার্ভ তৈরি হয়; অন্যদিকে আমদানি ব্যয়, ঋণের সুদ ও কিস্তি, বিদেশি কর্মীদের বেতন, শিক্ষার্থী ও পর্যটক খরচের কারণে রিজার্ভ থেকে ডলার বেরিয়ে যায়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠানো বেড়েছে, যা বৈদেশিক মুদ্রাবাজারকে স্থিতিশীল করেছে। ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে ডলার বিক্রি করতে হয়নি; বরং ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে ডলার কিনতে হয়েছে।

শুধু সেপ্টেম্বর মাসেই বাংলাদেশ ব্যাংক বেশ কিছু ডলার ক্রয় করেছে। ৪ সেপ্টেম্বর পাঁচটি ব্যাংক থেকে কেনা হয় ১৩ কোটি ৪০ লাখ ডলার, আর ২ সেপ্টেম্বর আটটি ব্যাংক থেকে কেনা হয় ৪ কোটি ৭৫ লাখ ডলার।

সাম্প্রতিক রেমিট্যান্স প্রবাহ
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী—

  • জুলাই ২০২৫: ২৪৭ কোটি ৭৯ লাখ ডলার (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৩০,২৩৯ কোটি টাকা)

  • আগস্ট ২০২৫: ২৪২ কোটি ২০ লাখ ডলার (বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ২৯,৫৪৮ কোটি টাকা)

এর আগে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মার্চে সর্বোচ্চ ৩২৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স আসে। পুরো অর্থবছরে রেমিট্যান্স দাঁড়ায় ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন ডলার, যা আগের বছরের তুলনায় ২৬ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রেমিট্যান্স ছিল ২৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলার।

গত এক দশকের রিজার্ভের ওঠানামা

  • ২০১৩ সালের জুন: ১৫.৩২ বিলিয়ন ডলার

  • ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর: প্রথমবারের মতো ৩৯ বিলিয়ন ডলার

  • ২০২০ সালের অক্টোবর: ৪০ বিলিয়ন ডলার

  • ২০২১ সালের ২৪ আগস্ট: সর্বোচ্চ ৪৮.০৪ বিলিয়ন ডলার

  • পরবর্তী সময়ে ডলার সংকটের কারণে রিজার্ভ ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকে

বিশ্লেষকদের অভিমত
অর্থনীতিবিদদের মতে, রেমিট্যান্স প্রবাহের ইতিবাচক ধারা অব্যাহত থাকলে রিজার্ভ আরও শক্তিশালী অবস্থায় ফিরে আসবে। তবে তারা সতর্ক করে বলেছেন, আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি ও বৈদেশিক ঋণের চাপ বাড়লে রিজার্ভে আবারও চাপ সৃষ্টি হতে পারে।

 

Facebook Comments Box

Posted ১১:৫৩ অপরাহ্ণ | বুধবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

sharebazar24 |

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১৩১৫
১৬১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭
৩০  
মো. সিরাজুল ইসলাম সম্পাদক
বার্তা ও সম্পাদকীয় কার্যালয়

৬০/১, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০

হেল্প লাইনঃ 01742-768172

E-mail: sharebazar024@gmail.com