| শুক্রবার, ১৮ জুন ২০২১ | 584 বার পঠিত | প্রিন্ট
২০১০ সালের মহা ধসের পর থেকেই এ দেশের শেয়ারবাজার তলানীতে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে বাজার ঘুরে দাঁড়াতে চেষ্টা করলেও তা সম্ভব হয়নি। ঘুরে ফিরে বাজার পতনের ধারায় ফিরে গেছে। যখনই বাজার কিছুটা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এসেছে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বেড়েছে। কিন্ত যখনই সাধারণ বিনিয়োগকারীরা সক্রিয় হয় লেনদেনে, ঠিক তখনই একটি চক্র কৌশলে বাজারকে ফেলে দিয়ে নিজেদের ফায়দা হাসিল করেছে। বিনিয়োগকারীদের সার্থে এবং বাজার উন্নয়নে নিয়ন্ত্রক সংস্থা অকেনগুলো পদক্ষেফ নিয়েছিল। তার কিছু বাস্তবায়িত হয়েছে, কিছু হয়নি। সর্বশেষ পদক্ষেপ ছিল ফ্লোর পাইস ইস্যু।
ফ্লোর প্রাইসের কারণে দীর্ঘদিন বাজার একই জায়গায় থমকে ছিল। এ সময়ে বাজারে তেমন বড় দরপতন না হলেও স্বাভাবিক পর্যায়েও আসেনি। বর্তমানে বাজার কিছুটা স্বাভাবিক। এমন সময়ে ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার করাটা ঠিক হয়েছে কিনা বলবো না। আসলে ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার না করে সংশোধন করা উচিত ছিল। ফ্লোর প্রাইস শেয়ার দরে ক্লোজিং প্রাইসের উপর ভিত্তি না করে, শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্যের ভিত্তিতে করা উচিত।
যেমন কোনো কোম্পানির শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য (এনএভি) যদি ৫০ হয়, তবে কোম্পানিটির শেয়ার দর ৫০ টাকার নিচে নামতে পারবেন। তেমনিভাবে ওই কোম্পানির শেয়ার দর ৫০ টাকা থেকে ১০০ টাকার মধ্যে ওঠানামা করতে পারবে। অর্থাৎ ফ্লোরপ্রাইস যত থাকবে ঠিক তার দ্বিগুণ বাড়তে পারবে। কিন্ত সম্পদমূল্যের নিচে নামতে পারবেনা। এটা করা হলো দুর্বল কোম্পানির শেয়ার দর অস্বাভাবিক হারে সম্পদমূল্যের কয়েকগুণ বেশি দরে লেনদেন হবে। পক্ষান্তরে ভালো কোম্পানির শেয়ার দরও স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে আসবে।
উদাহরনস্বরূপ বলা যায়, আনোয়ার গালভানাইজিংয়ের তৃতীয় প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য ১১ টাকা ৫২ পয়সা। কিন্ত এর শেয়ার দর ১৭০ টাকা ১০ পয়সা। অর্থাৎ কোম্পানিটির শেয়ারদর সম্পদমূল্যের চেয়ে প্রায় ১৫ গুণ।
আবার একই খাতের কোম্পানি আফতাব অটোমোবাইলসের দ্বিতীয় প্রান্তিকের প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য ৫৯ টাকা ৩২ পয়সা। বর্তমানে কোম্পানিটির শেয়ার দর ২৮ টাকা। অর্থাৎ কোম্পানিটির শেয়ার দর সম্পদমূল্যের প্রায় অর্ধেক।
উল্লেখিত দুইটি কোম্পানির প্রোফাইল বিশ্লেষণে আফতাব অটোমোবাইলের অবস্থা তুলনামুলক ভালো হলেও শেয়ার দর অনেক কম।
আনোয়ার গালভানাইজিং স্বল্পমূলধনী কোম্পানি। এর শেয়ার সংখ্যা কম হওয়ায় এটা নিয়ে কারসাজি করা সহজ। যে কারণে এর দর কৌশলে ম্যানিপুলেট করে বাড়ানো হয়েছে। পিই রেশিও বিবেচনায়ও কোম্পানিটির দর ঝুুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। এরপরও কোম্পানিটির দর সম্পদমূল্যের তুলনায় অনেক বেশি। পক্ষান্তরে আফতাব অটোর মূলধন অনেক। এর শেয়ারসংখ্যাও অনেক। যে কারণে এটা নিয়ে কারসাজির সুযোগ না থাকায় এর দর সম্পদমূল্যের অর্ধেকে লেনদেন হচ্ছে।
যদি এ দুই কোম্পানির সম্পদমূলকে ফ্লোর প্রাইস করা হয়, তবে আফতাব অটোর দর হবে ৬০ টাকা এবং আনোরয়ার গালভানাইজিংয়ের দর নেমে আসবে ২৩ টাকা। বাজারের উন্নয়নে এবং বিনিয়োগকারীদের সার্থে সম্পদমূল্যকে ফ্লোর প্রাইস হিসেবে ধরা যায় কিনা কর্তৃপক্ষের ভেবে দেখা উচিত।
Posted ১২:৪২ পূর্বাহ্ণ | শুক্রবার, ১৮ জুন ২০২১
sharebazar24 |
.
.