নিজস্ব প্রতিবেদক | সোমবার, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | 169 বার পঠিত | প্রিন্ট
দেশের পেট্রোলিয়াম জ্বালানি আমদানি থেকে শুরু করে পরিশোধন ও গ্রাহক পর্যায়ে বিপণন নিয়ন্ত্রণ করে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। বিপিসি তাদের তিন অঙ্গ প্রতিষ্ঠান পদ্মা অয়েল, মেঘনা পেট্রোলিয়াম এবং যমুনা অয়েল কোম্পানির মাধ্যমে জ্বালানি বিপণন করে থাকে। নির্ধারিত পণ্য বিক্রির বিপরীতে বিপিসি থেকে কমিশন পায় তারা। তবে অপারেশনাল খাতের তুলনায় নন-অপারেশনাল খাতে, বিশেষ করে ব্যাংক সুদে, গত পাঁচ বছরে বেশি আয় করেছে এই তিন কোম্পানি।
নিরীক্ষিত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গত পাঁচ বছরে পদ্মা, মেঘনা ও যমুনার কর-পরবর্তী সম্মিলিত নিট মুনাফা ৪ হাজার ৭৬২ কোটি টাকা, যার মধ্যে অপারেশনাল লাভ মাত্র ১ হাজার ২৯৯ কোটি টাকা। বাকি আয় এসেছে ব্যাংক সুদ থেকে। অভিযোগ রয়েছে, বিপিসির বকেয়া টাকা পরিশোধ না করে তিন কোম্পানি এফডিআরসহ দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ করে মূল ব্যবসার বাইরে বেশি লাভ করছে।
কীভাবে আয় করছে?
পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা বিপিসি থেকে জ্বালানি পণ্য বাকিতে পায় এবং ডিলারদের কাছে অগ্রিম টাকা নিয়ে নগদে বিক্রি করে। বর্তমানে ডিজেলে লিটারপ্রতি কমিশন ৭০ পয়সা, কেরোসিনে ৮০ পয়সা এবং অকটেন-পেট্রোলে ৯০ পয়সা। এর আগে কমিশন ছিল যথাক্রমে ৫০ ও ৬০ পয়সা।
তবে বিপিসির বকেয়া অর্থ দীর্ঘ সময় রেখে এফডিআরে বিনিয়োগ করেই বেশি আয় করছে কোম্পানিগুলো। ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত তিন প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক ডিপোজিট ও নগদ জমা ছিল ১৭ হাজার ৩৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে:
✔ পদ্মা অয়েল: ৫ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা
✔ মেঘনা পেট্রোলিয়াম: ৫ হাজার ৪৭৭ কোটি টাকা
✔ যমুনা অয়েল: ৬ হাজার ৬৬ কোটি টাকা
অন্যদিকে বিপিসির হিসাব অনুযায়ী একই সময়ে এই তিন কোম্পানির কাছে বিপিসির পাওনা ছিল ২৪ হাজার ৫৭৯ কোটি টাকা।
কতটা মুনাফা হয়েছে?
পদ্মা অয়েল
২০২৩-২৪ অর্থবছরে অপারেটিং মুনাফা ১৪৫ কোটি ৮৯ লাখ টাকা
ব্যাংক ইন্টারেস্টসহ নন-অপারেটিং আয় ৩৯১ কোটি ৬৯ লাখ টাকা
পাঁচ বছরে অপারেটিং প্রফিট ৪৩৪ কোটি টাকা, নন-অপারেটিং আয় ১,৫৬৮ কোটি টাকা (এর মধ্যে ব্যাংক সুদ ১,৫৩৪ কোটি টাকা)
মেঘনা পেট্রোলিয়াম
২০২৩-২৪ অর্থবছরে অপারেটিং মুনাফা ১৫৮ কোটি ৭৪ লাখ টাকা
নন-অপারেটিং আয় ৫২৭ কোটি ৪৪ লাখ টাকা
পাঁচ বছরে অপারেটিং প্রফিট ৬৭৯ কোটি টাকা, নন-অপারেটিং আয় ১,৮৯২ কোটি টাকা (ব্যাংক সুদ ১,৭৭১ কোটি টাকা)
যমুনা অয়েল
২০২৩-২৪ অর্থবছরে অপারেটিং মুনাফা ৪৫ কোটি টাকা, ব্যাংক সুদে আয় ৫১৯ কোটি টাকা
পাঁচ বছরে অপারেটিং প্রফিট ১৮৫ কোটি টাকা, নন-অপারেটিং আয় ১,৭৩৩ কোটি টাকা (ব্যাংক সুদ ১,৫৫১ কোটি টাকা)
সরকারি মন্তব্য
বিষয়টি নিয়ে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের সচিব মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, “জ্বালানি তেল সরবরাহ ব্যবস্থা ও আর্থিক সিস্টেম অটোমেশনের আওতায় আনা হচ্ছে। এতে বিপিসির বকেয়া অর্থ দীর্ঘদিন ধরে আটকে রাখার প্রবণতা বন্ধ হবে।”
Posted ১:০১ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
sharebazar24 | sbazaradmin
.
.