বুধবার ১৪ই মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩১শে বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সিসিএর সুদ আর কাউকেই নয়: বিনিয়োগ শিক্ষা ও সুরক্ষা তহবিলে যাবে পুরো অর্থ

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   মঙ্গলবার, ০৬ মে ২০২৫ | 55 বার পঠিত | প্রিন্ট

সিসিএর সুদ আর কাউকেই নয়: বিনিয়োগ শিক্ষা ও সুরক্ষা তহবিলে যাবে পুরো অর্থ

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের নামে জমা রাখা অর্থ ব্রোকাররা রাখে একক সমন্বিত গ্রাহক হিসাব বা সিঙ্গেল কম্বাইন্ড অ্যাকাউন্ট (সিসিএ)-এ। এই হিসাব থেকে ব্যাংক যে সুদ দেয়, তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্ন ও বিতর্ক চলছে। যদিও মূলধনের মালিক বিনিয়োগকারীরা, তবুও সুদের ওপর তাদের সরাসরি দাবি ছিল না। একইভাবে ব্রোকাররাও এটি সম্পূর্ণভাবে নিজেদের আয় হিসেবে দেখাতে পারত না।

সুদ থেকে অর্জিত এই অর্থ দীর্ঘদিন ধরে ব্রোকাররা ব্যবহার করেছে এবং সরকারের কাছে করও পরিশোধ করেছে। তবে এবার বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এই ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থার মতে, এই সুদের অর্থ কারও ব্যক্তিগত আয় নয়—এটি একটি সম্মিলিত সম্পদ এবং এর ব্যবহারও হওয়া উচিত একটি নিয়ন্ত্রিত কাঠামোর মাধ্যমে।

এই লক্ষ্যেই বিএসইসি সম্প্রতি একটি খসড়া বিধিমালা প্রকাশ করেছে। সেখানে প্রস্তাব করা হয়েছে, সিসিএ থেকে অর্জিত সুদের ২৫ শতাংশ যাবে স্টক এক্সচেঞ্জের ইনভেস্টরস প্রটেকশন ফান্ডে (IPF) এবং বাকি ৭৫ শতাংশ ব্যয় হবে বিনিয়োগকারীদের শিক্ষা ও সচেতনতা কার্যক্রমে

বিএসইসি জানায়, অতীতে ব্রোকাররা চাইলে সুদের অর্থ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে অনুপাত অনুযায়ী বণ্টন করতে পারত, কিন্তু তারা তা করেনি। ফলে এবার কমিশন সরাসরি অর্থ ব্যবহারের জন্য নির্দেশনা দিচ্ছে, যাতে কোনো পক্ষের একক মালিকানা দাবি না থাকে।

বিতর্ক ও সমালোচনার মুখে প্রস্তাবিত বিধিমালা

তবে এই খসড়া নিয়ে ইতিমধ্যেই বিতর্ক দেখা দিয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, যেহেতু সুদের অর্থের উৎস বিনিয়োগকারীদের মূলধন, তাই বিনিয়োগকারীদের সম্মতি ছাড়া এই অর্থ ব্যয় করাকে প্রশ্নবিদ্ধ বলে মনে করছেন অনেকে।
এছাড়া, বিনিয়োগ শিক্ষা কার্যক্রমে এই অর্থের ব্যবহার কতটা কার্যকর হবে, এবং এই ব্যয়ের উপর তদারকি করবে কারা—এই বিষয়গুলোও আলোচনায় এসেছে।

জনমত আহ্বান করেছে কমিশন

বিএসইসি অবশ্য বলেছে, এই বিধিমালা এখনো চূড়ান্ত নয়। প্রস্তাবিত খসড়াটি কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে এবং আগামী ১২ মে পর্যন্ত জনমত ও পরামর্শ গ্রহণ চলবে। যে কেউ এই বিষয়ে মতামত বা আপত্তি জানাতে পারবেন।

আস্থাহীন বাজারে সিদ্ধান্তের সম্ভাব্য প্রভাব

বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এই সিদ্ধান্ত এক ধরনের সম্পদ স্থানান্তর, যেখানে বিনিয়োগকারীদের আয়ের একটি অংশ তাদের অজান্তে এমন একটি খাতে ব্যয় করা হচ্ছে, যার উপর তাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই।
অন্যদিকে, ব্রোকারদের জন্য এটি বড় ধাক্কা হতে পারে—কারণ তারা সিসিএর সুদ থেকে নিয়মিত যে আয় করতেন, তা বন্ধ হলে তাদের আয় কমে যাবে। এই মুহূর্তে যখন বাজারে আস্থার সংকট চলছে, তখন এমন সিদ্ধান্ত পরিস্থিতিকে আরও দুর্বল করে দিতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে।

Facebook Comments Box

Posted ৪:০৭ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ০৬ মে ২০২৫

sharebazar24 |

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০
১১১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩২৪
২৫২৬২৭৩০৩১
মো. সিরাজুল ইসলাম সম্পাদক
বার্তা ও সম্পাদকীয় কার্যালয়

৬০/১, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০

হেল্প লাইনঃ 01742-768172

E-mail: sharebazar024@gmail.com