নিজস্ব প্রতিবেদক | শনিবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৫ | 138 বার পঠিত | প্রিন্ট
নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে আলোচিত একমি পেস্টিসাইড লিমিটেডের (ACME Pesticides Ltd.) প্লেসমেন্ট শেয়ার ইস্যু নিয়ে বড় ধরনের অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) প্রাথমিক তদন্ত শেষ করে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে, দুদকে প্রেরণের আগে অভিযুক্ত চার বিনিয়োগকারী নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করার সুযোগ চেয়ে কমিশনে আবেদন করেছেন।
সূত্র জানায়, অর্থ জমা ছাড়াই শেয়ার বরাদ্দ দেওয়ার অভিযোগে একমি পেস্টিসাইডের পরিচালনা পর্ষদের ছয়জনসহ মোট ১৫ ব্যক্তি এবং ছয় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় একাধিক প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যক্তিগত বিনিয়োগকারী জড়িত বলে তদন্তে উঠে এসেছে।
চার বিনিয়োগকারী—বেঙ্গল অ্যাসেট হোল্ডিংস লিমিটেড, চট্টগ্রাম প্লাস্টিক অ্যান্ড ফিশারিজ লিমিটেড, হেরিটেজ ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড এবং রুহুল আজাদ—বিএসইসিকে দেওয়া চিঠিতে দাবি করেছেন, তারা নির্ধারিত মূল্যের চেয়েও বেশি মূল্যে শেয়ার কিনেছেন। তাদের অভিযোগ, কমিশন তাদের ব্যাখ্যা নেওয়ার সুযোগ না দিয়েই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তদন্তে উঠে এসেছে, তালিকাভুক্তির আগে কোম্পানি তিন প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর কাছ থেকে প্রায় ১৪ কোটি টাকা গ্রহণ করেছে। পরবর্তীতে কোম্পানির ব্যাংক হিসাব ছাড়াও ব্যবস্থাপনা পরিচালক রেজা-উর-রহমান সিনহা, প্রধান অর্থ কর্মকর্তা সেলিম রেজা ও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নামে অর্থ লেনদেন করা হয়েছে। এই অর্থের বিপরীতে মোট ১ কোটি ১৩ লাখ ৯৪ হাজার ৩২৯টি শেয়ার (বোনাসসহ) ইস্যু করা হয়, যার মূল্য নির্ধারণ করা হয় ১১ কোটি ৩৯ লাখ ৪৩ হাজার টাকা, অর্থাৎ বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে প্রায় ২ কোটি ৬০ লাখ টাকার অতিরিক্ত অর্থ নেওয়া হয়েছে।
বিএসইসির মুখপাত্র আবুল কালাম বলেন, “আমাদের তদন্তে প্রমাণ পাওয়া গেছে—কেউ কেউ ভুয়া ব্যাংক ডকুমেন্ট জমা দিয়েছে, কেউ আংশিক টাকা দিয়েছে, আবার কেউ এক টাকাও না দিয়ে শেয়ার বরাদ্দ পেয়েছে। বিষয়টি দুদকে পাঠানো হয়েছে, তবে যারা প্রকৃত অর্থ পরিশোধ করেছে, তাদের রিভিউয়ের সুযোগ থাকবে।”
বিএসইসির ৯৭৩তম কমিশন সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, শুধু ওই চার বিনিয়োগকারী নয়—কোম্পানি সংশ্লিষ্ট আরও ছয় পরিচালক, কর্মকর্তা এবং আলোচিত ‘ছাগলকাণ্ডের’ মতিউর রহমানসহ মোট ১১ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে দুদকে প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।
অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন:
ব্যক্তি বিনিয়োগকারীর মধ্যে রয়েছেন: মতিউর রহমান, মো. আফজাল হোসাইন, তোফাজ্জল হোসাইন ফরহাদ, জাবেদ এম মতিন, আঞ্জুমান আরা বেগম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) শেখ মোহাম্মদ সরোয়ার, তৌহিদা আক্তার এবং রানা ইসলাম।
প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের মধ্যে রয়েছে: এসকে টিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, বিক্রমপুর পটেটো ফ্লেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড এবং এনআরবি ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড।
প্রসঙ্গত, ১৫০ কোটি টাকার অনুমোদিত মূলধনের মধ্যে একমি পেস্টিসাইডের পরিশোধিত মূলধন ১৩৫ কোটি টাকা। ‘বি’ ক্যাটাগরির এই কোম্পানি ২০২১ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয় এবং ৩ কোটি শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে ৩০ কোটি টাকা সংগ্রহ করে। তালিকাভুক্তির পর থেকেই কোম্পানির তহবিল ব্যবহারে অনিয়মের অভিযোগ ঘিরে বিতর্ক চলছেই।
Posted ১০:০৩ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৫
sharebazar24 | sbazaradmin
.
.