শনিবার ৭ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ২২শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

উচ্চ খেলাপি ঋণের চ্যালেঞ্জে এনবিএফআই খাত

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   সোমবার, ২৯ জুলাই ২০২৪ | 60 বার পঠিত | প্রিন্ট

উচ্চ খেলাপি ঋণের চ্যালেঞ্জে এনবিএফআই খাত

উচ্চ খেলাপি ঋণের কারণে চ্যালেঞ্জে রয়েছে দেশের নন-ব্যাংকিং ফাইন্যান্সিয়াল ইনস্টিটিউট বা এনবিএফআই খাত। খাতটিতে খেলাপি ঋণ যেমন রেকর্ড ছাড়িয়ে যাচ্ছে তেমনি কমছে হিসাবধারীদের সংখ্যাও। যথাযথ তদারকির অভাব, সুশাসনের ঘাটতি, স্বচ্ছতা- জবাবদিহিতার অভাব, নানা দুর্নীতি-অনিয়মই এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এছাড়াও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর দুর্বল মনিটরিং সিস্টেম, দক্ষ কর্মী সংখ্যার অভাবসহ বিভিন্ন কারণে বিতরণকৃত ঋণ আদায় করা যাচ্ছে না।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, শুধুমাত্র ২০২৩ সালেই ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৩৮ শতাংশ।বছরটিতে খেলাপি ঋণের পরিমান বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩ হাজার ২০৮ কোটি ৭০ লাখ টাকা। যদিও খাতের বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ৭৩ হাজার ৫৬০ কোটি ৫০ লাখ টাকা। সে হিসেবে বিতরণ করা ঋণের ৩২ শতাংশই খেলাপিতে পরিণত হয়েছে।

২০২৩ সালে আমানতকারীদের অ্যাকাউন্ট সংখ্যা কমেছে ৯০,৩৩৮টি বা ১৭.৩২ শতাংশ। ৫,২১,৫৫৯ থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে অ্যাকাউন্ট সংখ্যা নেমে এসেছে ৪,৩১,২২১টিতে।

চলতি বছরের শুরুতে স্মার্ট অর্থনীতি গড়ে তোলার জন্য ব্যাংকিং খাতের পাশাপাশি ব্যাংক বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠাসহ খেলাপি ঋণ নিয়ন্ত্রণ করার উপর জোর দেন ব্যবসায়ীরা।

ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) নন-ব্যাংকিং ফাইন্যান্সিয়াল ইন্সটিটিউট বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির প্রথম সভায় এ খাতে সুশাসন নিশ্চিত করার আহ্বান জানান ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ। ওই সভায় বলা হয়, নতুন করে যেন অনিয়ম, ঋণ খেলাপি না হয় সে বিষয়ে সকল অংশীজনকে দায়িত্বশীল হতে হবে। জাতীয় অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে ব্যাংকিং খাতের পাশাপাশি নন ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহে সুশাসন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণ জরুরি। এ জন্য এই খাতের উদ্যোক্তা, কর্মী এবং অন্যান্য অংশীজনদের মধ্যে দায়বদ্ধতার মনোভাব গড়ে তোলার ওপর জোর দেয়া হয়।

বিশ্লেষকরা বলছেন, নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করা গেলে দেশের ব্যবসা, বাণিজ্য ও শিল্প লাভবান হবে যা জাতীয় অর্থনীতিকে একটি শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছে দেবে। কিন্তু ক্রমবর্ধমান খেলাপি ঋণের কারণে এই খাতের উন্নয়ন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ছে এবং আমানতধারী হারাচ্ছে।

খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কয়েক বছর আগে এ খাতে দেখা বড় বড় কেলেঙ্কারি ও অনিয়ম দেখা গেছে। এসব কারণে খেলাপি ঋণ বেড়েছে। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান গ্রাহকের অর্থ সময়মতো ফেরত দিতে পারছে না। এতে দিনে দিনে অবস্থা আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। গ্রাহকের আস্থাও তলানিতে পৌঁছেছে। এতে নতুন করে এসব প্রতিষ্ঠানে আমানত রাখতে চাইছেন না গ্রাহকেরা।

আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের সংগঠন বাংলাদেশ লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্স কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশনের (বিএলএফসিএ) একটি সূত্র বলছে, কিছু আর্থিক প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন ধরে খুব খারাপ অবস্থায় রয়েছে। এসব রাতারাতি পরিবর্তন ঘটবে না। তবে খারাপ প্রতিষ্ঠানের অবস্থার উন্নতি করে পিপলস লিজিং, উত্তরা ফাইন্যান্স, ইন্টারন্যাশনাল লিজিংসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে প্রশাসক বসানো হয়েছে।

খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অন্যান্য খাতের মতোই আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতেও খেলাপি ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর প্রধান কারণ হলো– ব্যাংক যে ব্যবসা করে, তার বাইরে বিশেষ কোনো কাজ করে না আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো। ব্যাংকে যারা ঋণ পায়না তারা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছে আসে। এখান থেকে ঋণ নেয়। একটা সময় খেলাপি হয়ে পড়ে। কিন্তু এদের মার্চেন্ট ব্যাংক, সাবসিডিয়ারি ও পুঁজিবাজারের সঙ্গে যুক্ত হওয়া উচিত ছিল। এগুলো না করার কারণে খেলাপি সংস্কৃতির সাথে জড়িত হয়ে গেছে।

শেয়ারবাজার২৪

Facebook Comments Box

Posted ১০:৩৫ পূর্বাহ্ণ | সোমবার, ২৯ জুলাই ২০২৪

sharebazar24 |

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১৩
১৫১৬১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭
৩০৩১  
মো. সিরাজুল ইসলাম সম্পাদক
মো. মহসিন মিয়া উপদেষ্টা
বার্তা ও সম্পাদকীয় কার্যালয়

৬০/১, পুরানা পল্টন, ঢাকা-১০০০

হেল্প লাইনঃ 01742-768172

E-mail: [email protected]